পীরেরখালে ৯৯টি কালভার্ট !

পূবের হাওয়া ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ জানুয়ারি ২০২১, ৮:৩২ অপরাহ্ণআল মামুন, জকিগঞ্জ(সিলেট)প্রতিনিধি
সীমান্ত উপজেলা জকিগঞ্জে পৌরসভার কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৯ সালে। এ পৌরসভা জকিগঞ্জবাসীর বহু আন্দোলন সংগ্রামের ফসল। দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময়ে গ্রাম্য কাঠামোর এ পৌরসভার চেহারায় তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। পারাপারের সুবিধার্থে পীরের খালের উপরে বিভিন্ন সময়ে ব্যক্তি উদ্যোগে তৈরী হয়েছে ৯৯টি কালভার্ট। এর মধ্যে ৭১টি পাকা এবং ২৮টি বাঁশের তৈরী। পীরেরখালের উপর একটি বক্স ড্রেন নির্মিত হলে পুরো শহরের দৃশ্যপটই পাল্টে যাবে-এমন আশা পৌর কর্তৃপক্ষ ও শহরবাসীর।
জকিগঞ্জ বাজার থেকে শহরের শেষ সীমানা পর্যন্ত প্রায় আড়াই কি.মি. দীর্ঘ এ খালটি পৌরসভার ২, ৩, ৪, ৫, ও ৬ এই পাঁচটি ওয়ার্ডে কমবেশী বিস্তৃত। খালের পূর্ব পাশ ঘেষে রয়েছে জকিগঞ্জ-আটগ্রাম সড়ক। এই খাল পারাপারে প্রত্যেকে বাড়ির সামনে যার যার সাধ্যমতো কাচা পাকা সাঁকো বা কালভার্ট তৈরী করেছেন। যারা অর্থের অভাবে খালের উপর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সাকো বা কালভার্ট তৈরী করতে পারছেন না তারা খালের কাদা আর পানি মাড়িয়ে পারাপার করতে হয়।
পীরেরখালে বক্স ডেন নির্মিত হলে পৌরসভার জকিগঞ্জ বাজার, পীরেরচক, আলমনগর, আনন্দপুর, মধুদত্ত, গন্ধদত্ত গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার প্রত্যক্ষভাবে উপকৃত হবে, জলাবদ্ধতা দূর হবে এবং শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে। জকিগঞ্জ পৌরসভা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট কাওসার রশিদ বাহার বলেন, সংস্কারের অভাবে ঐতিহ্যবাহী পীরের খালটি এখন ভরাট হয়ে গেছে। দখলে ছোট হয়ে গেছে এ খাল। খালের দুই পাড়ে গজিয়েছে গাছগাছরাসহ নানান আগাছা। ফলে পানি নিষ্কাষণ না হওয়াতে শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় সামান্য বৃষ্টিতেই। নিজ নিজ বাড়ীতে যাতায়াতের জন্য যে যার মতো করে খালের উপর সংযোগ সেতু বা কালভার্ট তৈরী করছেন। যাদের পাকা করার সামর্থ নেই তারা বাঁশ, সুপারি কিংবা অন্য কোনো গাছের টুকরো দিয়ে অস্থায়ী সাঁকো বানিয়ে যাতায়াত করছেন। পৌর মেয়র মো.খলিল উদ্দিন বলেন- পীরের খালের উপর বক্স ড্রেন পৌরসভার একটি বড় কাজ। এটি নির্মিত হলে শহরের জলাবদ্ধতা দূর হবে, মশা- মাছির উৎপাত কমবে, নোংরা আবর্জনা ও দুর্গন্ধ দূর হবে, পৌর শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে এবং মানুষের কষ্ট দূর হবে। নির্বাচনে বিজয়ী হলে পীরের খালে ড্রেন নির্মাণের চেষ্টা করবে। পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী কাজী মোহাম্মদ হিফজুর রহমান তার নির্বাচনী ইশতেহারে পীরের খালের উপর বক্স ড্রেন নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন জকিগঞ্জ বাজার থেকে শেওলা রাস্তার মুখ পর্যন্ত খালটি সোয়া এক কি.মি. দীর্ঘ দিনে বক্স ডেন নির্মাণ না হবার মূল কারণ আন্তরিকতার অভাব । এ প্রকল্পের সম্ভাব্য প্রাক্কলিত ব্যয় সোয়া তিন কোটি টাকা। স্থানীয় সংসদ সদস্যের ডিও লেটারের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রকৌশল অধিদপ্তরের যে কোনো প্রকল্পের অধীনে কাজটি বাস্তবায়নের চেষ্টা করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন স্কতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আব্দুল আহাদ। পীরেরচকের অধিবাসী মখলিসুর রহমান বলেন-পীরের খাল দিয়ে এক সময় নৌকা যাতায়াত ছিল। কুশিয়ারা নদীর সংযোগ থাকায় এ খালে প্রচুর মাছও পাওয়া যেতো। বর্তমানে খালটির উৎস মুখ বন্ধ রয়েছে। মরা এ খালটি সংস্কার করে এর উপর একটি বক্স ড্রেন নির্মিত হলে পৌরবাসী উপকৃত হবে।