ছাতকে অশ্রদ্ধা ও অবহেলায় পেপারমিল শহীদ মিনার, অস্থিত্ব সংকটে
পূবের হাওয়া ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ৮:১৫ অপরাহ্ণবিজয় রায়,ছাতকঃ
ভাষার মাস ফেব্রুয়ারী। ২১ ফ্রেব্রুয়ারী শোক দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃ ভাষা দিবস। শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদনে সারা দেশের ন্যায় ছাতকেও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবি সংগঠন ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। ১২টা ১মিনিট শহীদ মিনার ফুলে-ফুলে সজ্জিত হয়ে পড়বে। কিন্তু এ এবছরও ছাতক পাল্প এন্ড পেপার মিলের মিনি মার্কেটস্থ শহীদ মিনারটিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসবে না কেউ। এবারো একটি ফুলও পড়বে না অবহেলিত এ শহীদ মিনারে। অশ্রদ্ধা ও অবহেলায় আরো একটি বছর পার করবে স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে প্রতিষ্ঠিত এ শহীদ মিনারটি। ছাতকস্থ সিলেট পাল্প এন্ড পেপার মিল উৎপাদনে যাওয়ার সময় মিলের নিজস্ব ভুমিতে শ্রমিক ইউনিয়ন ও সিবিএ কর্তৃক মিল সংলগ্ন সুরমা নদীর পাড়ে ৮৬ সালে নির্মিত হয় একটি শহীদ মিনার। তৎকালীন সময়ে মিলের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সিবিএ, শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, এসপিপিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন জাতীয় দিবস গুলোতে এ শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতেন শহীদদের। পরবর্তীতে এসপিপিএম উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে আরো একটি শহীদ মিনার নির্মিত হলে এ শহীদ মিনারটি ক্রমেই অবহেলিত হয়ে কদর হারাতে থাকে। ২০০২ সালে মিলটি পে-অফ ঘোষনা করা হলে এ শহীদ মিনারটি মানুষের চোখের সম্পুর্ন আড়ালে চলে যায়। অবহেলায় ও অশ্রদ্ধায় পড়ে থাকে বছরের পর বছর। যুগ-যুগ ধরে অনাদরে পড়ে থাকা এ শহীদ মিনাটি ক্রমেই ভেঙ্গে অস্থিত্ব হারাতে থাকে। ছোট আকৃতির হওয়ায় বর্তমানে মিনারের ভাঙ্গা স্তম্ভে বসে আড্ডায় মত্ত হয় ভবঘুরেরা। অবহেলা ও নোংরা অবস্থায় পড়ে থাকা এ শহীদ মিনারটি সকলের নজরে আসলেও রক্ষনা-বেক্ষনে কেউ এগিয়ে আসছেন না। এটি রক্ষায় ব্যবস্থা গ্রহন না করলে এক সময় এ শহীদ মিনারটির অস্থিত্ব আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। স্থানীয় লোজকনের মতে, শহীদ মিনার একটি জাতীয় স্তম্ভ। এটির অবমাননা করা অপরাধের সামিল। মিল কর্তৃপক্ষ এর দায় এড়াতে পারে না। ছাতক কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠা কমিটির সদস্য, প্রবীন রাজনীতিবিদ আব্দুল অদুদ জানান, ছাতকে ১৯৭২ সালে প্রথম শহীদ মিনা প্রতিষ্ঠা হয় শহরের সিনেমা হল সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ৭শতক ভূমির উপর। জেনারেল এমএজি ওসমানী এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। ৮০’র দশকে পেপার মিলের শ্রমিক সংগঠন কর্তৃক মিনি মার্কে সংলগ্ন এলাকায় একটি শহীদ মিনারটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এটি মিলের নিজস্ব শহীদ মিনার । তবে শহীদ মিনারের অবহেলা ও অশ্রদ্ধা করা আর ভাষা আন্দোলন শহীদের প্রতি অশ্রদ্ধা করার সামিল। শহীদ মিনারটি সংস্কার ও রক্ষনা-বেক্ষন করে এটিকে ব্যবহার উপযোগি করে তলোর জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান। আওয়ামীলীগ নেতা, মুক্তিযোদ্ধা আমির আলী বাদশা জানান, জাতীয় সম্পদ হলেও এ শহীদ মিনারটি মুলতঃ মিল কর্তৃপক্ষের। এটির সম্মান রক্ষা করাও তাদের দায়িত্ব। হয় শহীদ মিনারটিকে সংস্কার করে ব্যবহার উপযোগি করা নতুবা পরিত্যক্ত ঘোষনা করা। কোনভাবেই অবমাননা করা যাবে বলে তিনি মনে করেন।