জামালগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেল ৮ দলিত পরিবার
পূবের হাওয়া ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ এপ্রিল ২০২১, ৯:৫৯ অপরাহ্ণ
মোঃ ওয়ালী উল্লাহ সরকার, জামালগঞ্জ প্রতিনিধি :::
সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলায় দলিত পরিবারগুলোর জীবনমান উন্নয়নে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ৮ দলিত পরিবারকে আধা পাকা ইটের তৈরী জায়গাসহ ঘর উপহার হিসেবে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল ভীমখালী ইউনিয়নের গোলামীপুর গ্রামের হতদরিদ্র এসব পরিবার এতসুন্দর পাকা ঘর ও জায়গা পেয়ে আনন্দে আত্মহারা। করোনা ভাইরাসের এই দুর্যোগ মুহুর্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশসহ তার সুস্থতা কামনা করেছেন হতদরিদ্র সুবিধাভোগিরা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানাযায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে সমতলের অসহায়,ভূমিহীন, গৃহহীন ও দলিত পরিবারের জীবন মান উন্নয়নে ২০২০-২১ অর্থ বছরের উপজেলার ৩০০টি আধাপাকা ঘর নির্মাণ করার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। যেখানে প্রতিটি বাড়ীতে রয়েছে আধাপাকা টিনের চাল ষ্টিলের দরজাসহ ২টি করে জানালা। ঘরের সাথেই করে দেওয়া হয়েছে রান্নাঘর, টয়লেট, বারান্দাসহ সিড়িঁ। প্রতিটি ঘরের ব্যয় ধরা হয়েছে এক লক্ষ একাত্তর হাজার টাকা।
হতদরিদ্র দলিতদের আদি পেশা ছিল চামড়ার ব্যবসা ও গোধারা ঘাট (ফেরী ঘাট) দিয়ে মানুষ পারাপার করা। কিন্তু বর্তমানে চামড়ার ব্যবসা না থাকায় আবার ফেরী ঘাট ও অনেক ইজারা মূল্য হওয়ায় এই পেশায় থেকে অন্য পেশায় চলে এসেছে তারা। তাই এখন জুতা সেলাই করাই একমাত্র পেশা। সারা বাংলাদেশে নদীর পারে তাদের বসবাস। অন্যের জুতা সেলাই ও রং করে যা পায় তা দিয়ে চলে তাদের সংসার। নুন আনতে পান্তা ফুরানো এসব পরিবার আধাপাকা ঘরসহ ২ শতাংশ ভূমি পেয়ে অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি।
মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর এই ব্যতীক্রমি উদ্যোগে তাদের জন্য নতুন আশার আলো জাগিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সূত্রে আরো জানা যায় পিছিয়ে পরা এই জনগোষ্ঠির জীবনমান উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় তাদেরকে সমাজ সেবা কার্যালয় থেকে বিনা সুদে ঋন এবং তাদের সন্তানদেরকে শিক্ষিত করে তুলতে শিক্ষা উপকরণসহ সহযোগিতা করা হচ্ছে।
গোলামীপুরের সুবিধাভোগী বাদল রবি দাস বলেন তাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা চার জন। আগে ছিল চামড়া ও গোধারা ঘাটের ব্যবসা। বর্তমানে জুতা সেলাইয়ের কাজ করেন। আমাদের কোন জায়গা জমি নাই। একেক সময় একেক জায়গায় নদীর পারে বসবাস করে আসছি। যেখানে ঝড়বৃষ্টি হইলে ঘরে পানি পড়তো বাচছাদের কষ্ট হতো। ইউএনও স্যারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ২ শতাংশ জায়গাসহ পাকাঘর পেয়ে আমরা খুশি। বাপ-দাদার আমল থেকে আমরা চেষ্টা করেছি একটু জায়গার জন্য কিন্তু অভাবের কারনে পারিনাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সে স্বপ্ন পূরণ করে দিয়েছেন। এই বাড়ীতে পরিবার নিয়ে সুন্দর করে থাকতে পারবো। আমরা সবাই প্রধানমন্ত্রীর জন্য আর্শিবাদ করি ভগবান যেন উনাকে দীর্ঘজীবী করেন।
একই গ্রামের মহিনী রবি দাস বলেন বাবার জীবন কেটেছে বেড়ার ঘরে। বৃদ্ধা মা-বাবা স্বামীসহ ২ সন্তান নিয়ে আমার জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে কুড়ে ঘরে। আমাদের দিন আনা খেটে খাওয়া সংসার। কখনোও স্বপ্নেও ভাবিনি ইটের পাকা বাড়ীতে ঘুমাতে পারবো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবতায় আমাদের সে স্বপ্ন পুরন হয়েছে। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। এখন না খেতে পারলো ইটের বাড়ীতে নিশ্চিন্তে সন্তানদের নিয়ে ঘুমাতে পারবো।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেব বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। তাই প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় গোলামীপুর গ্রামে ৮টি দলিত পরিবারকে ২ শতাংশ জায়গাসহ আধাপাকা ঘর করে দেওয়া হয়েছে। তারা পূর্বে নদীর পারে অন্যের জায়গায় ভাঙ্গা ঘরে বসবাস করতো। তাদের পূর্ণবাসনের জন্য ঘরসহ ভূমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে।