সাংবাদিক হেলালের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা, নেপথ্যে আহাদ
পূবের হাওয়া ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ মে ২০২১, ১:০০ পূর্বাহ্ণস্টাফ রিপোর্টার ::::
অমঙ্গল আশঙ্কায় থানায় জিডি করার পরও পার পেলেন না সাংবাদিক হেলাল আহমদ চৌধুরী। জিডির খবরে রাতেই গোলাপগঞ্জ থানায় তার বিরুদ্ধে তদন্ত ছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা নিয়েছে পুলিশ। আর এ মামলার বাদি হয়েছেন সিলেট জেলা পরিষদের সদস্য হাসিনা বেগম। হেলাল আহমদের অভিযোগ- এ মামলার নেপথ্যের কুশিলব গোলাপগঞ্জের থানার বিতর্কিত সাংবাদিক জামায়াত নেতা আবদুল আহাদ ওরফে নুর মিয়া।
গত বৃহস্পতিবার রাতে গোলাপগঞ্জ থানায় ষাটোর্ধ্ব সাংবাদিক হেলাল আহমদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে তড়িঘড়ি করে মামলা রেকর্ড করে থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে গোলাপগঞ্জ থানায় জিডি না করতে পেরে সিলেটের কোতোয়ালি থানায় জেলা পরিষদের সদস্য হাসিনা বেগমের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়রি করেন তিনি। মিথ্যা মামলাসহ হয়রানির আশঙ্কা করে জিডি করার ১০ ঘন্টা পেরোনোর আগেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা রেকর্ড করা হয়।
গোলাপগঞ্জ থানায় জেলা পরিষদ সদস্য হাসিনা বেগমের দায়ের করার মামলার এজাহারে সাংবাদিক হেলাল আহমদ চৌধুরীকে অসৎ, চরিত্রহীন ও খারাপ প্রকৃতির লোক অভিহিত করে তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অতীতে মামলা রয়েছে উল্লেখ করেন। হেলাল আহমদ চৌধুরী নামীয় আইডি থেকে সম্প্রতি জেলা পরিষদ সদস্য হাসিনা বেগমসহ সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য প্রচার করছেন। গত ১ মে থেকে ১৬ মে পর্যন্ত বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে জেলা পরিষদ সদস্য হাসিনা বেগমকে উদ্দ্যেশ্য করে কটুক্তিকর ও আপত্তিকর বক্তব্য প্রচার করেন। এছাড়া হাসিনা বেগমের নাম বিকৃত করে ‘পার্লার হাসিনা’ উল্লেখ করে প্রচার করেছেন, যা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে আমলযোগ্য অপরাধ হওয়ায় হাসিনা বেগম মামলা করেছেন। মামলা নম্বর-২০(০৫)২১।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিক হেলাল আহমদ চৌধুরী সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানায় এ ধরনের মামলা রেকর্ডের আশঙ্কা করে সাধারণ ডায়রি করেন। যার নম্বর-১৩৭৫। তারিখ-২০.০৫.২০২১। এতে তিনি উল্লেখ করেন, কানা হেলাল গবেষণা পরিষদ ও চাঁদের তারা নামে দুটি ফেসবুক আইডিতে তার নাম ও ছবি ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে। এছাড়া জনৈক হাসিনা বেগম ওরফে পার্লার হাসিনা কিছু লোকজন দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানিসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে মান সম্মান ক্ষুন্নসহ বড় ধরণের ক্ষতির আশঙ্কা করেন জিডিতে।
এ ব্যাপারে হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, সাংবাদিকতা করার কারণে আজীবন কুচক্রী মহলের সাথে আমার বিরোধ ছিলো। তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা মামলার আসামি হতে হয়েছে। এবারো ন্যায়ের পক্ষে থাকায় গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ ও থানার চিহ্নিত দালাল আবদুল আহাদ ওরফে নুর মিয়ার মদদে এ মিথ্যা মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এ ধরণের মামলা করা হবে এমন আশঙ্কায় কোতোয়ালি থানায় জিডি করার ১০ ঘন্টা পার হওয়ার আগেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তদন্ত ছাড়াই মামলা নিয়েছে গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ। অথচ আমি কোতোয়ালি থানায় জিডির বিষয়টি ওসি হারুনকে জানিয়েছিলাম।
তিনি আরো বলেন, আবদুল আহাদ ওরফে নুর মিয়া আমাকে অতীতে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় আসামি করেছে। যার সংখ্যা অন্তত ৬টি। এরমধ্যে সে নিজে একটি মামলার বাদি ও অন্যান্য মামলার ইন্দনদাতা ও তদবীরকারী ছিলো। সাংবাদিক মাহবুব আহমদ চৌধুরী থানার দালাল আহাদের বিরুদ্ধাচারণ করায় ফেনসিডিল ও চুরির মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানি করেছে। এছাড়া গোলাপগঞ্জের শত শত মানুষকে নানা কৌশলে হয়রানি করে আসছে সে।
গোলাপগঞ্জ থানার ওসি হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে আইন মেনে হেলাল আহমদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে সম্পৃক্ততা পাওয়া না গেলে মামলার ফাইনাল রিপোর্ট প্রদান করা হবে। জিডির বিষয়ে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানা কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।
মামলার বাদি হাসিনা বেগম বলেন, হেলাল আহমদ চৌধুরী, যা মন চায় তা ফেসবুকে লিখছে। আমার ব্যবসা নিয়েও উল্টাপাল্টা লিখেছেন ফেসবুকে।
তিনি বলেন, কারো সাথে আমার ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ নেই। হেলাল আমার ইজ্জতের উপর হামলা করেছেন। তার শাস্তি হওয়া দরকার।
তিনি বলেন, আবদুল আহাদ আমার সম্পর্কে চাচা হলেও গত বার বছর ধরে তার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই, কথাও হয় না। কারো ইন্দনে মামলা করিনি। আমি জনপ্রতিনিধি বুঝে শুনেই মামলা করেছি।