গণধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে আহাদের তৎপরতা
পূবের হাওয়া ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ মে ২০২১, ১২:১১ পূর্বাহ্ণ৪ ধর্ষণকারীর বিরুদ্ধে মামলা, ভিকটিম হাসপাতালে
স্টাফ রিপোর্টার ::::::
সিলেটের গোলাপগঞ্জে এক তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগে ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে তাদের আটক করা হয়। এ ঘটনায় থানয় মামলা হলেও গণধর্ষণকারীদের বাঁচাতে তৎপর হয়ে ছিলেন গোলাপগঞ্জের আলোচিত আবদুল আহাদ ওরফে নুর মিয়া। তার অপরাধ সংশ্লিষ্টতার সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রকাশ্যে এখন আর তাকে থানায় দেখা যাচ্ছে না। তবে থানার সামনে অবস্থান নেয় আবদুল আহাদ ওরফে নুর মিয়া। গণধর্ষণের আসামিদের মামলা থেকে বাঁচাতে ও ভিকটিমের পরিবারের সাথে সমঝোতার জন্য তিনি থানার সামনে অবস্থান নেন। এদিকে মামলার আসামিদের গতকাল রোববার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. লুৎফর রহমান জানান, গত শনিবার দিবাগত রাতে গোলাপগঞ্জের গন্ডামারা গ্রামের চরোরাগোল্লা নামক স্থানে টিলার পাশে জঙ্গলের ভিতর একটি মেয়ের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা বাঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে খবর দেন। পরে ইউপি চেয়ারম্যান গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় খবর দিলে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন- উপজেলার বাঘা ইউনিয়নের তুরুকভাগ গ্রামের লিলু মিয়ার ছেলে আব্দুল হাকিম (২০), দক্ষিণ কান্দিগাঁও গ্রামের মঈন উদ্দিনের ছেলে রাজন আহমদ (২২), খালপাড় গ্রামের সাহাব উদ্দিনের ছেলে শিপন আহমদ (১৯) ও শাহপরান থানার পীরের চক গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে আক্তার হোসেন (২৩)।
জানা যায়, গত শনিবার প্রেমিক আব্দুল হাকিম তরুণীর সাথে যোগাযোগ করে দেখা করার জন্য মুরাদপুর বাজাওে যাওয়ার জন্য বলে। এরপর রাতে তরুণী মুরাদপুর বাজারে গেলে একটি সিএনজি অটোরিকশাযোগে তরুণীকে নিয়ে গন্ডামারা গ্রামের চরোরাগোল্লা নামক টিলার পাশের জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার পর প্রেমিক আব্দুল হাকিম বন্ধুদের ফোন দিয়ে ঘটনাস্থলে ডেকে তরুণীকে সবাই ধর্ষণ করে।
এসময় ধর্ষিতা তরুণীর চিৎকার শুনে স্থানীয়রা বাঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে খবর দেন। পরে ইউপি চেয়ারম্যান গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় খবর দিলে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করে।
এদিকে গণধর্ষণের অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেফতার করে থানায় নেওয়ার পরপরই গণধর্ষণকারীদের বাঁচাতে তৎপর হয়ে ওঠেন আবদুল আহাদ ওরফে নুর মিয়া। তিনি অনুসারীদের নিয়ে থানার সামনে গিয়ে গণধর্ষণদের বিষয়টি দফারফা করার চেষ্টা করেন। তবে নিজে থানার ভেতরে না ঢুকলেও তার অনুসারী একাধিক ব্যক্তি থানায় ঢুকে এ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে।
কিন্তু স্থানীয়দের তোপের মুখে পুলিশ গণধর্ষণের মামলা নেয়। পুলিশি প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে গণধর্ষণকারীর অপরাধের কথা স্বীকার করে। পরবর্তীতে ভিকটিম বাদি হয়ে এজাহার দায়ের করলে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার একটি গণধর্ষণ মামলা রুজু করা হয়।
এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জের আবদুল আহাদ বলেন, আমার বাসা থেকে বের হলে থানা পার হয়ে যেতে হয়। রাতে থানার রাতে আমরা একটি টাকা পয়সা সংক্রান্ত বিরোধ শেষ করতে সানরাইজে বসেছিলাম। তবে গণধর্ষণকারীদের ছাড়াতে কোনো তৎপরতা ছিলো না বলে দাবি করেন তিনি।
গোলাপগঞ্জ মডেল থানার হারুনর রশীদ চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় মামলা হয়েছে। এছাড়া ওই তরুণীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।