স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও প্রাপ্ত সম্মান পাননি শহীদ বুদ্ধিজীবী দুই পরিবার
পূবের হাওয়া ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ৯:২১ পূর্বাহ্ণবিশষ প্রতিনিধি : কাউখালীতে স্বাধীনতার ৫২ বছর পার হয়ে আবার ঘুরেফেরে জাতীর সামনে আসছে আজ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালে এই দিনে পাক হানাদার বাহীনি ও তাদের এদেশীয় দোষর রাজাকার, আল বদর, আল শামস্ সহ অন্যান্য অঙ্গ সংগনের আস্ত্রধারীরা বাংগালী জাতীর বিবেক গর্বের ধন বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে পৈশাচিক ভাবে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে বাঙ্গালী জাতীকে মেধা শূণ্য করে।
অনেক বুদ্ধিজীবীর লাশের কোন চিহ্ন আজও খুজে পাওয়া যায়নি। দেখা যায় ১৪ই ডিসেম্বর আসলে সারা জাতী গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছেন জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। যাদের ত্যাগের বিনিময় আজ আমরা স্বাধীন ।
কিন্তু স্বাধীনতার ৫২ বছরপরেও কাউখালীর সন্তান বাঙালি জাতীর বিবেক দুই শহীদ বুদ্ধিজীবী ড. আবুল খায়ের এবং মোঃ এয়াকুব মিয়াকে তার নিজ জন্মস্থান কাউখালীতে কেউ তেমন ভাবে স্মরণ করছে না।
এমনকি কাউখালীর নতুন প্রজন্ম ভুলেই গেছে তাদের স্মরণ করতে। অন্যদিকে নতুন প্রজন্মের নিকট এই দুই বুদ্ধিজীবীর অবদান এবং তাদের জীবন ইতিহাস সম্পর্কে কোন তথ্যই জানা নেই। যে কারণেই তাদেরকে স্মরণ করতে পারছেনা নতুনরা। অভিযোগ রয়েছে স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও প্রাপ্ত সম্মান টুকুও পাচ্ছেননা বুদ্ধজীবী পরিবারগুলো।
পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার কাঠালিয়া গ্রামের এক সম্ভ্রন্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন শহীদ বুদ্ধিজীবী ড,আবুল খায়ের । তিনি তৎকালীন ঢাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিসের রিডার ছিলেন। যে ছিলেন বাঙ্গালী জাতীর স্বাধীনতার একজন প্রবক্তা। ১৯৭১ সালে ১৪ ই ডিসেম্বর পাকিস্থানী দোষর বদর বাহিনী তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়াটার হতে ধরে নিয়ে যায়। এবং রায়ের বাজার বদ্ধভূমিতে নির্মম নির্যাতন অত্যাচার চালিয়ে তাকে হত্যা করে লাশ গুম করে। পরবর্তী ৪ জানুয়ারী তার লাশ উদ্ধার হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে কবর দেওয়া হয়। অন্যদিকে আরেক শহীদ বুদ্ধিজীবী মোঃইয়াকুব মিয়া তিনি কাউখালী উপজেলার পারসাতুরিয়া গ্রামের মিয়াবাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। শের ই বাংলা এ,কে ফজলুল হক গর্ভণ থাকা কালীন তিনি তার একান্ত সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আন্যদিকে তিনি তৎকালীন আওয়ামীলীগের একজন বিশিষ্ট নেতাও ছিলেন। ১৫ই ডিসেম্বর বদর বাহীনি তাকে ঢাকার ৪৪ নং তোপখানার রোডের বাসা হতে ধরে নিয়ে যায়। মোহাম্মদপুর সাত ঘম্বুজ মসজিদের নিকট কাটাসুরের ইটখোলার নিকট নানা অত্যাচার নির্যাতন শেষে নির্মম ভাবে তাকেও হত্যা করে। হত্যার ১৯ ই ডিসেম্বর তার লাশ পাওয়া গেলে আজীমপুর কবর স্থানে কবর দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ প্রাথমিক প্রধান শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং শহীদ বুদ্ধিজীবী ড: আবুল খায়েরের বড় ভাইয়ের মেয়ে সুলতানা ণীলা জানান
যাদের রক্তের বিনিময়ে দেশ পেলো লাল সবুজের পতাকা, একটা স্বাধীন ভূখণ্ড। তিনি জানতে চান শহীদ পরিবার কি পেলো? শুধু ১৪ডিসেম্বর এলে খোঁজ খবর শুরু হয়। এটা কি আমাদের প্রাপ্য ছিল?
তিনি আরো জানান ৩৫/সি নীলক্ষেত ইউনিভার্সিটি কোয়াটারে চাচার পরিবার থাকতেন। ১৯৭২ সনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা দিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর শহীদ পরিবার অন্য কোন বাড়ী সরকারী ভাবে বরাদ্দ না দেয়া পর্যন্ত কোয়াটারে থাকবেন। কিন্তু ৮৫ পরবর্তী সময়ে কোয়াটার ছেড়ে দিতে হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে ৯ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীদের দাফন করা হয়। তারা আজ অবহেলিত ও অরক্ষিত অবস্থায় আছে। পরিবারের পক্ষ থেকে একটা নাম ফলক দেয়া হয়েছে। অদ্যাবধি কবর বাধানোর অনুমতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেয় নাই।
তিনি আরো বলেন শহীদ বুদ্ধিজীবী ড: আবুল খায়ের এর নিজ উপজেলা কাউখালীর নতুন প্রজন্ম অনেকেই জানে না। যে কারণে শহীদ পরিবারকে কেউ স্মরণ করে না।
কাউখালীতে ২ ই বুদ্ধিজীবীর নামে এমন কিছু করা হোক যেন আগামী প্রজন্ম তাদের সম্পর্কে জানতে পার।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শুধু সাংবাদিকদের দুই একটি ফোন পাওয়া যায়।
তিনি দাবি করেন সরকার সকল শহীদ বুদ্ধিজীবীদের কথা স্মরণ রাখার জন্য নিজ নিজ এলাকায় এমন কোন স্মৃতি রাখতে হবে যাতে যত দিন আছে বাংলা ততদিনই যেন জানতে পারে মানুষ তাদের ইতিহাস। অন্যদিকে এই সমস্ত বুদ্ধিজীবীদের পরিবারে লোকদের খোজখবর শুধু ডিসেম্বরেরই নয় সবসময় নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবী ও আনুরোধ জানান ।
স্বাধীনতার সপক্ষের সরকার ১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকারীদের খুজে তালিকা তৈরি করে তাদেরও বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করারও দাবি করেন।