করোনা ভাইরাস : এ লড়াইয়ে জিততেই হবে : ডা. কামরুল হাসান খান
পূবের হাওয়া ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ এপ্রিল ২০২০, ৫:৪৮ অপরাহ্ণঅদৃশ্য এক ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অণুজীব পুরো বিশ^কে তছনছ করে দিয়েছে। কেড়ে নিচ্ছে অসংখ্য মানুষের জীবন। তার গতিপথ অপ্রতিরোধ্যÑ পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিজ্ঞানের আধুনিকতম যুগে, মানুষের অগোচরে, মানুষকে অসহায় করে।
১ এপ্রিল ২০২০ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৯০৩৭৯৯ জন এবং মৃত্যুর সংখ্যা ৪৫৩৩৪ জন। আক্রান্ত হয়েছে ২০৩টি দেশ। এখানে বলে রাখা ভালো :কভিড-১৯ তিন ধরনের হচ্ছেÑ মৃদু, মাঝারি আর মারাÍক। এর মধ্যে মৃদু রোগীর সংখ্যাই বেশিÑ ৯২ থেকে ৯৫ শতাংশ। ইতোমধ্যে বিরাট সংখ্যক রোগী সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন। এখন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি (২০০২৬৯) এবং মৃত্যুর সংখ্যা ইতালিতে ১৩১৫৫। তার পরের অবস্থান স্পেনের (মৃত্যুর সংখ্যা ৯০৫৩)। চীনের পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হলে নতুন করে কিছু কিছু রোগী শনাক্ত হচ্ছে এবং মৃত্যুও বরণ করছে। সে তুলনায় দক্ষিণ এশিয়া তুলনামহৃলকভাবে আক্রান্তের সংখ্যা কম। পাকি¯øানে রোগী ২০৭১; মৃত্যু ২৬, ভারতে রোগী ১৬৩৭, মৃত্যু ৪৫ (অন্যান্য দেশ ৪Ñ ১৪৬ পর্যন্ত রোগীর সংখ্যা)। দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বশেষ আক্রান্ত দেশ বাংলাদেশ। ২ এপ্রিল বাংলাদেশে রোগীর সংখ্যা ৫৬, মৃত্যুর সংখ্যা ৬ এবং সম্পহৃর্ণ সুস্থ ২৬ জন। বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মিজোরাম, মনিপুর, মিয়ানমার, নেপাল, ভুটানসহ এসব অঞ্চলে তুলনামহৃলক প্রাদুর্ভাব অপেক্ষাকৃত কম। বিশ^ব্যাপী নানা গবেষণা চলছে। এর মধ্যে বলা হয়েছে, গ্রীষ্মপ্রধান দেশে অপেক্ষাকৃত কম হতে পারে; কিন্তু আমেরিকার লুজিয়ানা ও মিয়ামি বর্তমানে উষ্ণ বলে রোগীর সংখ্যা কিন্তু কম নয়।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনে অজানা কারণে নিউমোনিয়া রোগী শনাক্ত হয় এবং ১১ জানুয়ারি ২০২০ প্রথম রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ৩০ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ^ব্যাপী জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা ঘোষণা করে। ২০২০ সালের ১১ ফেব্র“য়ারি তারিখে বিশ^ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা করোনাভাইরাসকে কভিড-১৯ হিসেবে নামকরণ করে।
চীনের পর বিশ^ব্যাপী দ্রুত জ্যামিতিক হারে কভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ে। কোনো কোনো দেশে প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিল লক্ষ্য করা যাচ্ছে আবার কোথাও বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা প্রথম থেকেই সময়োচিত গাইডলাইন এবং দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে। প্রথমেই বলেছে রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা বাড়াতে। এটা অনুসরণ করে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুর অনেকটা সফলতা পেয়েছে। বর্তমান বিশে^ কভিড-১৯-এর গতিপ্রকৃতির ওপর বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ মন্তব্য পাওয়া গেছে। বিভিšæ দেশের মৃত্যুর হারের বেশ কিছু কারণ চিহিক্রত করেছে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থাÑ১. জনসংখ্যার বয়সের অনুপাত; ২. স্বাস্থ্যসেবার সক্ষমতা; ৩. পরীক্ষার সংখ্যা।
১. জনসংখ্যার বয়সের অনুপাতÑবয়স্ক লোকেরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন এবং মৃত্যুবরণ করছেন। পাশাপাশি যাদের দীর্ঘস্থায়ী রোগ আছে, যেমনÑ ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ, ফুসফুসের অসুখ, হƒদরোগ, ডায়াবেটিস ও যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিæমুখী। যে দেশে বয়স্ক লোকের সংখ্যা বেশি, সে দেশেই মৃত্যুহার বেশি দেখা যাচ্ছে।
২. স্বাস্থ্যসেবার সক্ষমতা :রোগীদের চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধার মধ্যে প্রয়োজন যথাযথ প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশন, স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসার সরঞ্জামাদি, হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ও আইসিইউ। এখানে আইসিইউর গুরুত্বটাই বেশি দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপহৃর্ণ রোগীরা খুব কম সময়ে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শ^াসযšস্ল অকার্যকর করে ফেলে। এটা প্রতিরোধে আইসিইউর কোনো বিকল্প নেই। প্রতি লাখে মানুষের বিপরীতে জার্মানির আইসিইউ শয্যা সুবিধা ২৯টি, যুক্তরাষ্ট্র ৩৪, ইতালি ১২ আর স্পেনে ১০টি। শেষের দুই দেশের মৃত্যুহার অন্য দেশগুলোর চেয়ে তুলনামহৃলকভাবে বেশি। কিন্তু উল্টো চিত্র দক্ষিণ কোরিয়ায়, মাত্র লাখে ১০টি। তারপরও তারা মৃত্যুহার নামিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে এক ভাগেরও নিচে। খুব দ্রুত সংক্রমণের হারও কমিয়েছে, যা সম্ভব হয়েছে হোম কোয়ারেন্টাইনের কঠোর পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে। এছাড়া দেশটি কমপক্ষে তিন লাখ মানুষের করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করেছে। তার মধ্যে নয় হাজার জনের ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। বড় আকারে পরীক্ষার উদ্যোগের কারণে তারা সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটিই নিয়šস্লণে রাখতে সফল হয়েছে। জার্মানিতে এই রোগ খুব অল্প সংখ্যক মানুষই মৃত্যু বরণ করেছে। জার্মানিতে এই রোগে খুব অল্পসংখ্যক মানুষই মৃত্যুবরণ করেছে। এ দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৭৬৫৪৪। মৃত্যুবরণ করেছেন ৮৫৮ জন। প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যাপকহারে তরুণদের পরীক্ষা করানোই জার্মানির এই নিæ মৃত্যুহারের অন্যতম কারণ। দেখা গেছে, যেসব দেশ পরীক্ষা করে কম এবং যারা খুব বেশি অসুস্থ, তাদেরই কেবল পরীক্ষা করতে চায়, তাদের মধ্যে মৃত্যুহার বেশি। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোন দেশের স্বাস্থ্যসেবা কতটা সক্ষম, সেটিও বড় ভ‚মিকা রাখছে। করোনাভাইরাসের সংকটাপšæ রোগীদের বাঁচাতে প্রয়োজন কৃত্রিম শ^াস-প্রশাস যন্ত্র। যেসব রোগী পর্যাপ্টø শয্যা আর নিবিড় পর্যবেক্ষণের যšস্লাদি পাবেন, তাদের বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে, না পেলে থাকে মৃত্যুঝুঁকি।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা : সেখানে এখন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২০৭৫৩৫। অথচ প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার পরে সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আগে দেড় মাসের বেশি সময় পেয়েছিল। দুভাগ্য, ট্রাম্প প্রশাসন বিষয়টাকে প্রথমে গুরুত্ব দেয়নি। এপ্রিলজুড়ে সেখানে লকডাউন ঘোষণা করেছে।
প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ :গত ৮ মার্চ ২০২০ বাংলাদেশে প্রথম কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর আগে চীনের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রচার ও প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করে। সরকার, গণমাধ্যম ও পত্রপত্রিকা সচেতনতা সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং জনগণ যথেষ্ট সচেতন হয়েছে বলে মনে হয়।
সরকার কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপগুলো :১. মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান সংকুচিত করা; ২. স্বাধীনতা দিবসের সব অনুষ্ঠান বাতিল; ৩. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা, এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত; ৪. অফিস-আদালত বন্ধ ঘোষণা; ৫. গণপরিবহন, নৌপথ, আকাশপথ বন্ধ ঘোষণা; ৬. ২৬ মার্চ থেকে দেশব্যাপী হোম কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা; ৭. জনপ্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য সামরিক বাহিনী ও পুলিশ বাহিনী নিয়োগ; ৮. সীমিত আকারে ব্যাংক, কাঁচাবাজার, খাবার দোকান খোলা রাখা; ৯. অল্প আয়ের মানুষের জন্য খাদ্য-অর্থ প্রদান।
প্রধানমšস্লী শেখ হাসিনা গত ৩১ মার্চ গণভবন থেকে ৬৪ জেলায় স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে খোঁজখবর নেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
করণীয় : বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা শুরু থেকেই সময়োচিত দিকনির্দেশনা দিয়ে চলেছে। প্রথমেই তারা বলেছে : পরীক্ষা, পরীক্ষা, পরীক্ষা। দ্বিতীয়ত বলেছে : সন্দেহভাজন ব্যক্তি (সোর্স) পৃথক্করণ, পরীক্ষা করা আর পর্যাপ্টø চিকিৎসা প্রদান। সর্বশেষ বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা ৬টি পরামর্শ দিয়েছে। এসবের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে করণীয় নির্ধারণ করেছেÑ ১. সচেতনতা :অতি সাধারণ কিছু বিষয় মেনে চললে একজন নিজেকে করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদ রাখতে পারবে সেগুলো হচ্ছেÑ ক. হাঁচি-কাশি থেকে ১ মিটার (৩ ফুট) দহৃরত্ব বজায় রাখুন; খ. হাতের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছেÑ সন্দেহজনক স্থানে হাতের স্পর্শ লাগলে হাত ভালো করে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নাক-মুখ-চোখ হাতের স্পর্শ থেকে নিয়ন্ত্রণে রাখুন; গ. মাছ, মাংস, ডিম ভালো করে সিদ্ধ করে খাবেন; ঘ. ভিড় এড়িয়ে চলুন। যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার করোনামুক্ত ঘোষণা না করবে, ততক্ষণ এগুলো মেনে চলতে হবে।
২. সামাজিক দহৃরত্ব :বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু সামাজিক দহৃরত্বের নিয়মকানুন মেনে চললেই করোনার সংক্রমণে অর্ধেক মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব। কমপক্ষে ৩ ফুট বা ১ মিটার দহৃরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগম এড়ানো, গণপরিবহন ব্যবহার না করার মতো বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে।
৩. কোয়ারেন্টাইন (সঙ্গনিরোধ) : কোয়ারেন্টাইন ২ রকমÑ ক. প্রাতিষ্ঠানিক :যেখানে সরকারি ব্যবস্থাপনায় কঠোরভাবে নিয়ম অনুসরণ করা হয়। এ রকম ব্যবস্থা যত বৃদ্ধি করা যাবে তত মানুষ নিরাপদ থাকবে; খ. হোম কোয়ারেন্টাইন বাড়িতে দুই রকমÑ ১. সুস্থ মানুষ যাতে আক্রান্ত না হয় সে জন্য তারা নিজেরাই সব নিয়মকানুন মেনে নিজে এবং নিজের পরিবারকে নিরাপদ রাখবে; ২. সন্দেহভাজন ব্যক্তি সবার থেকে আলাদা থাকবে কমপক্ষে ১৪ দিনÑ আলাদা কক্ষ, আলাদা খাবার গ্রহণ, আলাদা পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ রাখার জন্য তাকে এটি করতে হবে।
৪. পরীক্ষা (রোগ নির্ণয়) :ইতোমধ্যে সরকার পরীক্ষার সুযোগ অনেক বৃদ্ধি করেছে। ২৯টি ল্যাবের পরিকল্পনায় ১১টি চালু করেছে। আরটি-পিসিআর সবসময় সঠিক নির্ণয় নাও করতে পারে। সে ক্ষেত্রে উপসর্গ যাদের আছে, তাদের ২৪ ঘণ্টায় দ্বিতীয়বার করতে হবেÑ পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
৫. চিকিৎসা : কভিড-১৯-এর রোগীদের আইসোলেশন (বিচ্ছিন্নকরণ) বাধ্যতামহৃলক। কারণ এত দ্রুত ছড়ানো রোগ এর আগে দেখা যায়নি। এ জন্য পরীক্ষা, চিকিৎসা ও রোগীদের চলাচল একেবারে অন্য সবকিছু থেকে বিচ্ছিšæ রাখতে হবে। কোনোক্রমেই কভিড-১৯-এর রোগীর সঙ্গে অন্য রোগীদের এক হাসপাতালে রাখা সঠিক হবে না। কোয়ারেন্টাইন ও আইসিইউসহ হাসপাতালের সংখ্যা পর্যাপ্টø বাড়িয়ে প্রস্তুতি থাকতে হবে।
৬. স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকি নিরসনে ব্যবস্থা :মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ১ এপ্রিল বলেছেন, তাদের পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট কমে আসছে। সে কারণে পিপিইর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। যারা কভিড-১৯-এর সংস্পর্শে না আসবে পিপিই তাদের ব্যবহারের কোনো প্রয়োজন নেই। পিপিই, পরীক্ষা কিটসহ সব প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো পর্যাপ্টø মজুদ রাখতে হবে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পরিবহন, খাবারসহ সব নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৭. সমন্বয় : স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সব বিভাগের এবং সংশিম্লষ্ট আন্তঃমন্ত্রণালয়ের ঘনিষ্ঠ সমন্বয় রাখতে হবে।
৮. নেতৃত্ব : পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কার্যক্রমে সঠিক নেতৃত্ব, চেইন অব কমান্ড এবং সমন্বয় অত্যন্ত জরুরি। মুহুর্তের মধ্যেই জরুরি সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজন হতে হবে।
৯. অন্য রোগীদের চিকিৎসা : ঢাকা বা বিভাগীয় শহরের বড় বড় হাসপাতাল রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট রাখতে হবে। কোনোক্রমেই যেন অন্য রোগীদের চিকিৎসা ব্যাহত না হয় এবং কভিড-১৯ রোগীদের সঙ্গে সংমিশ্রণ না হয়।
১০. মাস্ক ব্যবহার : বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা বারবার বলেছেÑ কভিড-১৯ রোগী বা তাকে বহনকারী ব্যক্তি ছাড়া কারও মাস্ক ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। অহেতুক মাস্ক ব্যবহারে বরং ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
গোটা বিশ^ আজ করোনাভাইরাসের থাবায় বিপর্যস্ত, এগিয়ে চলেছে এক অজানা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকেÑ মানুষের জীবন গভীর সংকটের মুখোমুখি, অচল হয়ে পড়েছে সভ্যতা, ধ্বংসের মুখে অর্থনীতি। এ মুহহৃর্তে অজানা এক ভয়ংকর লড়াইয়ের মুখোমুখি বিশ^বাসী। দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধের পর এ রকম ভয়াবহ সংকট বিশ^বাসী দেখেনি। অতীতের সব দুরবস্থাকে অতিক্রম করে চলেছে করোনাভাইরাসÑএক অদৃশ্য অণুজীব। ব্যর্থ হচ্ছে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, মহাশক্তি ও অর্থনীতি। মানছে না ধনী-দরিদ্র, সাদা-কালো ধর্ম-অধর্ম, সীমানাÑ এক কাতারে নিয়ে এসেছে গোটা বিশ^কে।
আমাদের বাংলাদেশের রয়েছে লড়াইয়ের দীর্ঘ ইতিহাস। লড়াই করে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা এনেছি, এনেছি গণতন্ত্র। প্রধানমন্ত্রী সঠিক নেতৃত্ব দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে চলেছেন। আজাদ বাংলাদেশের সব মানুষকে দলমতধর্মনির্বিশেষে কঠিন দৃঢ় ঐক্যবদ্ধ থাকতেই হবে। বাংলাদেশের মানুষ যখন ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, তখন পরাজয়ের ইতিহাস নেই। আজ এখনই এক সময়, যখন কেউ নিরাপদ নয়। তাই সবাইকে সব নিয়মকানুন, নির্দেশনা অনুসরণ করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। এ লড়াইয়ে আমাদের জিততেই হবে।