সূর নরম করল মিয়ানমার জান্তা
পূবের হাওয়া ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ মার্চ ২০২৪, ৩:২২ অপরাহ্ণআন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারে কয়েক বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে সামরিক জান্তা। তবে বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও গণতন্ত্রকামীদের সাথে পেরে উঠছে না জান্তা বাহিনী। একের পর এক এলাকা হাতছাড়া হয়েছে জান্তা সরকারের। এরপর কিছুটা সুর নরম করে বক্তব্য দিয়েছেন জান্তা সরকারের প্রধান মিন আউং হ্লাইং।
মিয়ানমারের সামরিক শাসক দলের জেনারেল সম্প্রতি বলেন, গণতন্ত্রকে মজবুত করার লক্ষ্যে জান্তা অস্থায়ীভাবে ক্ষমতায় রয়েছে মাত্র। পাশাপাশি, নির্বাচনের আয়োজনের পরিকল্পনাকে বানচাল করতে আগ্রহী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে জনগণ ও সামরিক বাহিনীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। খবর রয়টার্সের
বার্ষিক আর্মড ফোর্সেস ডে কুচকাওয়াজে ভাষণ দিতে গিয়ে সিনিয়র জেনারেল মিন আউং হ্লাইং (২০২১ সালে সেনা অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন) বলেন যে, বিরোধীরা বিদেশি সাহায্য পাচ্ছে, দেশকে ধ্বংস করার এবং গণতান্ত্রিক শাসনে মিয়ানমারের ফেরার পরিকল্পনাকে বানচাল করার চেষ্টা করছে।
রাজধানী নেপিদোতে কয়েকশো সৈন্যের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সামরিক বাহিনী, পুলিশ বাহিনী ও জনগণ শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে সক্রিয়। সামরিক বাহিনী ও জনগণের মধ্যে ঐক্য থাকা প্রয়োজন।’
সাবেক এই ব্রিটিশ উপনিবেশে ১৯৬২ সালে প্রথম ক্ষমতা দখলের পর থেকে সামরিক বাহিনী সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। দেশের নানা প্রান্তে বিদ্রোহ দমন ও অভ্যুত্থানের পর থেকে বেহাল দশায় পড়া অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে তারা বিভিন্ন দিকে লড়াই করে চলেছে।
মিয়ানমার এখন গৃহযুদ্ধে আটকে পড়েছে। এক দিকে সামরিক বাহিনী এবং অন্য দিকে সংখ্যালঘু জনজাতি গোষ্ঠীর বিদ্রোহীদের শিথিল জোট। তাদের সাথে যোগ দিয়েছে একটি সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলন, যারা অভ্যুত্থান-বিরোধী বিক্ষোভে জান্তার রক্তাক্ত দমনপীড়নের ফলে গড়ে উঠেছে।
সমাজকর্মী ও পশ্চিমা কয়েকটি দেশের অভিযোগ, বিদ্রোহ দমনের প্রচেষ্টায় সামরিক বাহিনী নিয়মমাফিকভাবে নির্যাতন ও নৃশংসতা চালিয়েছে এবং বেসামরিক এলাকায় ব্যাপক বিমান হামলা ও কামান ব্যবহার করা হয়েছে। পাশাপাশি, তাদের বিরুদ্ধে ইচ্ছামতো গ্রেফতারি, নির্যাতন ও মৃত্যদণ্ড কার্যকর করার অভিযোগও রয়েছে।
জান্তা এই অভিযোগগুলোকে মিথ্যাচার বলে উল্লেখ করেছে। মিন আউং হ্লাইং বুধবার বলেন, বিরোধীরা সহিংসতা, লুটপাট চালাচ্ছে এবং ঘৃণা ছড়াচ্ছে। আন্তর্জাতিক সাংবাদিক মহল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা সামরিক বাহিনীকে লক্ষ্যবস্তু করে ভুয়া খবর পরিবেশন করছে বলেও তিনি দাবি করেন।
তিনি আরও যোগ করেন, কিছু শক্তিশালী দেশ সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধরত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সাহায্য করার মাধ্যমে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছে। তবে, তিনি এর কোনও প্রমাণ দেননি।