সোনাগাজীর সেই ওসির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ২৭ মে
পূবের হাওয়া ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ এপ্রিল ২০১৯, ৬:১৮ অপরাহ্ণফেনী: ফেনীর সোনাগাজী থানা পুলিশের প্রাক্তন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৭ মে দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার মামলাটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় সময় আবেদন করে।
বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন সময়ের আবেদন মঞ্জুর প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী তারিখ ২৭ মে ঠিক করে দেন।
এর আগে গত ১৫ এপ্রিল ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে বাদী হয়ে মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
আদালতে জবানবন্দি প্রদানকালে বাদী বলেন, নুসরাত হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশে আলোচিত ঘটনার মধ্যে অন্যতম। নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। যৌন হয়রানির বিষয়ে নুসরাত অভিযোগ করলে আসামিসহ তাকে থানায় নেওয়া হয়। সেই সময় ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন তাকে জেরা করেন৷ ওই জেরার ভিডিও ওসির মুঠো ফোনে ধারণ করেন। নুসরাতের মৃত্যুর পরের দিন গত ১১ এপ্রিল বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এমন ঘটনা আগে আর একটায় ঘটেনি। থানার ভেতরে এমন ভিডিও ধারণ করা ও সম্প্রচার করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপরাধ।
এই ঘটনার পরে ভিকটিম বেঁচে গেলেও, বেঁচে থাকাটা কঠিন হয়ে যেত। গত ১১ এপ্রিল ইউটিউবে-এ ভিডিও দেখতে পাই। অশ্লীল কিছু তথ্যা ধারণ করে ইউটিউব/সোস্যাল মিডিয়াতে প্রকাশ করেছে। এর ফলে ভিকটিমের মান সম্মানহানি হয়েছে।
মামলার এজাহারে থেকে জানা যায়, গত ২৭ মার্চে নুসরাতকে কেরাসিন ডেলে পুড়িয়া হত্যার করার পূর্বে তাকে থানায় নিয়ে যায় ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। থানায় নিয়ে যেয়ে নিয়মবহির্ভূত ভাবে নুসরাতকে জেরা করতে থাকেন। ওই জেরার সময় ভিডিও ধারণ করেন। পরবর্তীতে ফেসবুক ও ইউটিউবে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই সময় মোয়াজ্জেম হোসেন অত্যান্ত অপমানজনক এবং আপত্তিকর ভাষায় প্রশ্ন করেন। এক প্রর্যায়ে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ওই ভিকটিমের বুকে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানী করেন।
ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন নিয়মবর্হিভূত ভাবে অনুমতি ব্যতিরেকে নুসরাত জাহান রাফির ভিডিও ধারণ করে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার করেন। অপমানজনক ও আপত্তিকর ভাষা প্রয়োগ করে মানহানি করেছেন যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওই ঘটনায় ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারা মামলাটি দায়ের করেন। একই সাথে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতার পরোয়ানা জারির আবেদন জানান।
গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানীর অভিযোগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদ্দৌলাকে আটক করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে। এ ঘটনায় রাফির মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।
গত ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হয়।